সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। একই সাথে জেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া অভ্যন্তরীণ সকল নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। টানা কয়েক দিন যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই বন্যা কবলিত হয়ে পড়ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন হাজার হাজার মানুষ। পানিতে গো-চারণ ভূমি তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলার খামারিরা। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে আজ রবিবার সকালে তা বিপৎসীমার মাত্র ৬ সেন্টিমিটার ও কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের দায়িত্বে থাকা গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার (২১ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে আজ রেবিবার (২২ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টের দায়িত্বে থাকা গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) ওমর ফারুক জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার (২১ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনা নদীর ভাঙনে জেলার কাজীপুর ও চৌহালী উপজেলার নদী যমুনা অঞ্চলে ভাঙন শুরু হয়েছে। কাজীপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ি, নাটুয়ারপাড়া, চরগিরিশ, মনসুরনগর, নিশ্চিন্তপুর ও তেকানী ইউনিয়নসহ চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানুই গ্রামে শুরু হয়েছে তীব্র নদীভাঙন। এসব এলাকার অন্তত ১৩টি গ্রামের বেশকিছু বসতবাড়ি ধীরে ধীরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কাজীপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন জানান, ইউনিয়নের ডিক্রীদোরতা গ্রাম ও জিআরডিপির ৬ নম্বর নৌকাঘাট পয়েন্ট এলাকায় ব্যাপকভাবে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।

ভাঙন আতঙ্কে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বাড়ি ঘর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি। বিনষ্ট হচ্ছে নতুন স্থাপন করা বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার। বর্তমানে নদী পারের এলকাবাসী ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানান তিনি । সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মাছুদুল হক বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, আরও দু-একদিন পানি বাড়তে পারে। যে কারণে এই সময়ের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে অতঙ্কিত হবার কিছু নেই।